ছোট ব্যবসার আইডিয়া খুঁজছেন? অল্প পুঁজিতে ছোট-খাটো একটি ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন। আমাদের আজকের পোস্টে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো, কিছু জনপ্রিয় এবং লাভজনক ছোট ব্যবসার আইডিয়া। ছোট ব্যবসার আইডিয়া পাওয়া সহজ নয়। অনেকগুলো বৈশিষ্ট্র্য যাচাই-বাছাই করতে হয়। এরপর, ব্যবসা শুরু করা যায়।
সত্যি কথা বলতে কি, একটি ব্যবসা দাঁড় করানো কঠিন কাজ। ছোট ব্যবসা করতে আরো বেশি জটিলতা তৈরি হয়। কারণ, ছোট ব্যবসার প্রতিযোগিতা বেশি। বড় ব্যবসাগুলো ছোট ব্যবসাগুলোকে দাবিয়ে রাখতে চায়। ছোট ব্যবসাগুলোকে বিকশিত হতে দেয় না।
ছোট ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে বের করবো। সেই আইডিয়াকে বাস্তবায়ন করার উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। কিভাবে একজন বেকার মানুষ ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারেন সেটা নিয়ে থাকবে গাইডলাইন।
ছোট ব্যবসার আইডিয়া
সময় উপযোগি একটি ছোট ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে বের করতে পারলে, ব্যবসা সফল করা সম্ভব। সঠিক পরিকল্পনা কাজের অর্ধেক। ব্যবসা শুরু করার আগে সু-পরিকল্পনা করুন। ব্যবসা ছোট হলেও পরিকল্পনা ছোট হওয়া উচিৎ নয়।

আপনার উদ্ভাবনী শক্তি পরিশ্রম একাগ্রতা হার-না মানার মানসিকতা থাকলে ছোট একটি ব্যবসাকে বটবৃক্ষের মতো করে তোলা সম্ভব। কথায় আছে, রাই কুড়াতে কুড়াতে বেল হয়, বিন্দু বিন্দু জলে জমে তৈরি হয় সাগর। তেমনই ছোট ছোট ব্যবসা থেকে বড় ব্যবসা তৈরি করা যায়।
ছোট ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে বের করা কঠিন নয়। ছোট ব্যবসার আইডিয়াকে বাস্তবায়ন করা কঠিন। বেকার মানুষেরা ছোট ব্যবসা শুরু করতে চান। তাদের হাতে টাকা থাকে না। ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারেন না। তাদের জন্য বড় ব্যবসা শুরু করা কঠিন হয়ে যায়। তাদের জন্যই ছোট ব্যবসার আইডিয়া। আমাদের সাইটে নতুন ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আরেকটি পোস্ট আছে। সেটিও পড়তে পারেন।
অ্যাকুরিয়ামের রঙিন মাছের ব্যবসা
বর্তমানে, বাসাবাড়ি অফিস যেখানে যাই রঙিন মাছ দেখতে পাই। ছোট ছোট অ্যাকুরিয়াম দেখতে পাই। সৌখিন মানুষদের অ্যাকুরিয়ামে মাছ চাষের শখ আছে। তারা রঙিন মাছ পালনকে শখ হিসেবে নিয়েছে। বাসা বাড়িরর সৌন্দর্য বাড়াতে রঙিন মাছের কদর আছে।
রঙিন মাছ পালনকে ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন। কয়েকটি ট্রেইনিং করুন। কিভাবে রঙিন মাছের ডিম ফুটানো হয়। কিভাবে রেনুপোনা বাঁচিয়ে রাখতে হয়। এসব আয়ত্ত্ব করতে পারলে, রঙিন মাছের ব্যবসাকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করা যায়।
এই ছোট ব্যবসার আইডিয়া থেকে মাসে ২০-৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আর, ব্যবসা বড় করতে পারলে, মাসে কয়েক লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ছোট ব্যবসার আইডিয়া-মুক্তা চাষ
ছোট ব্যবসার আইডিয়া মধ্যে ঝিনুক চাষ করা অন্যতম। ঝিনুক থেকে মুক্তা তৈরি করা যায়। মুক্তা কতোটা মূল্যবান সেটাতো আপনারা জানেন। মুক্তার চাহিদা অনেক। সঠিকভাবে উৎপাদন করতে পারলে একটি পুকুর বা জলাসয় থেকে বছরে কয়েক লক্ষ টাকার মুক্তা চাষ করা যায়।
মুক্তা ঝিনুকের প্রদাহের ফল। ঝিনুক ধরে অপারেশন করে বিভিন্ন ডিজাইনের মুক্তার সেপ দেয়া হয়। যেই সেপ দেয়া হয়। সেই সেপ অনুযায়ী ঝিনুকের মধ্যে মুক্তা তৈরি হয়। এসব মুক্তা সংগ্রহ করে প্রক্রিয়া করে বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করা হয়। দেশে বিক্রয় করা হয়। বিদেশে রপ্তানি করা হয়। ব্যবসায়িকভাবে মুক্তার চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায়।
ছাদ বাগান/ ছাদে নার্সারি
বাগান করতে হলে গ্রামে থাকতে হবে এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তিলোত্তমা ঢাকার বুকেও বাগান করা যায়। ঢাকা শহরের বিল্ডিংগুলোর দিকে তাকালে নমুনা দেখতে পাওয়া যায়। একটু একটু করে ঢাকা সবুজায়ন কারার চেষ্টা চলছে।
শুরু করতে পারেন ছাদ বাগান। ঢাকায় ছাদ বাগান করার প্রথম বাঁধা হলো বাসা তো নিজের না। বাসার মালিক ছাদে বাগান করতে দিবে না। বেশিরভাগ বাসার মালিক এটাই করে। এজন্য শুরু করার আগেই মালিকের সাথে কথা বলুন। একটি ছাদ বাগানের সুবিধাগুলো তুলে ধরুণ।
প্রয়োজনে বাসার মালিককে ছাদ ভাড়ার টাকা দিন। কিছু মালিক এমনিতেই দিবে। কিছু মালিককে টাকা দিয়ে ছাদ ভাড়া করতে পারেন। এভাবেই শুরু হবে আপনার ছাদ বাগানের কাজ। এটাকে ব্যবসায়িকভাবে করুন। সফলতা আসবে আশাকরি।
ছোট ব্যবসার আইডিয়া ফুড ডেলিভারি
খুব ছোট করে শুরু করতে পারেন ফুড ডেলিভারি ব্যবসা। ফুড ডেলিভারি ব্যবসায় সফলতা পাওয়ার প্রধান উপায় হলো ভালো রান্না। আপনার রান্নার হাত ভালো হলে ব্যবসার সুনাম ছড়িয় পড়বে দেশব্যাপী। সুরাধুনির কদর সব জায়গা।
নিজের রান্নার ব্যবসা না থাকলেও ফুড ডেলিভারি ব্যবসা করা যায়। কিভাবে? শহরের কয়েকটি বড় বড় রেস্টুরেন্টের সাথে যোগাযোগ করুন। KFC, Taste Treat, and Star Kabab থেকে ফুড নিয়ে আপনার পেজ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডেলিভারি দিয়ে ইনকাম করতে পারেন।
ছোট্ট করে একটি ব্যবসা শুরু করবেন। কয়েকটি আইটেম রান্না করবেন। ফেসবুকে একটি পেজ খুলুন। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করুন। মানুষ এখন ফেসবুকে প্রচুর সময় কাটান। ফেসবুকে এড ক্যাম্পেই চালান। প্রচুর কাস্টমার পাবেন।
ঘরে বসে প্যাকিং এর কাজ
ঘরে বসে প্যাকিং এর কাজ করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। প্যাকিং কে আপনি ব্যবসা হিসেবে নিবেন। আপনার এই আইডিয়াকে ব্যবসায় পরিণত করতে পারলে, বছরে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন।
আপনার পতিষ্ঠানের কাজ হবে শুধু প্যাকিং করা। থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্যাকিং করাই আপনার ব্যবসার মূল টার্গেট। ঢাকার চকবাজার, পুরান ঢাকায় প্রচুর দেশীয় কারখানা আছে। এসব কারখায় উৎপাদিত পণ্য প্যাকিং জন্য অর্ডার নিতে পারেন।
দেশের অনেক অঞ্চলে খেলনা তৈরির কারখানা আছে। দেশীয় এসব কারখানায় উৎপাদিত খেলনা প্যাকিং করতে দেয়া হয়। আবার, চট্ট্রগাম রাজশাহী সিলেটের মতো বিভাগীয় শহলে প্যাকিং এর কাজের চাহিদা আছে। আপনার ছোট ব্যবসার আইডিয়া কে কাজে লাগান। তৈরি করুন ছোট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
মোমবাতি প্যাকিং করানো হয়। ধুপকাঠি প্যাকিং করানো হয়। কলম প্যাকিং করানো হয়। জুয়েলারি প্যাকিং করানো হয়। এমন প্রচুর পণ্য আছে। এসব পণ্য আপনার প্রতিষ্ঠানে প্যাকিং এর কাজ করে দিবে।
মাসে ২০-৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বড় হলে, আয়ও বাড়বে। তাহলে, দেরি না করে বাস্তবরুপ দিন আপনার ব্যবসার আইডিয়াকে।
বিড়াল কুকুরের ছোট ব্যবসার আইডিয়া
ছোট ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে শুরু করতে পারেন বিড়াল কুকুরের ব্যবসা। ঢাকার কাটাবনে বিড়াল কুকুরের দোকান আছে। এখানে দেশ বিদেশের বিড়াল কুকুর পওয়া যায়। বিড়াল কুকুরের খাবার পাওয়া যায়। এদের পালার বিভিন্ন জিনিস এখানে পাবেন।
এবার কথা হলো আপনি কিভাবে ব্যবসা করবেন? এখান দেখে পাইকেরিতে বিড়াল কুকুর কিনুন। আপনার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এগুলো বিক্রয় করুন। বিড়াল কুকুর এবং বিড়াল কুকুরের খাবার সহ বিস্তারিত বিক্রয় করা যায় এমন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন।
এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিড়াল কুকুর ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও দেশীয় বিড়াল কুকুরের বাচ্ছার চাহিদা আছে। গ্রাম থেকে অল্প টাকায় কিনে ঢাকায় বিক্রয় করতে পারেন। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিক্রয় করুন।
নিজের বাসা বাড়িতে একজোড়া বিড়াল কুকুর পালন করুন। এগুলোর থেকে বাচ্চা দিবে। সেই বাচ্চা বড় করে বিক্রয় করতে পারবেন। এভাবে, ছোট ব্যবসার আইডিয়া কে বড় ব্যবসায় পরিণত করতে পারবেন। ঢাকা শহরের মিরপুরে ফারিঘর নামে একটি বিড়াল কুকুরের হোস্টেল আছে। এটাও একটি ছোট ব্যবসার আইডিযা হতে পারে।
উপসংহার
পরিশেষে বলতে পারিযে, ছোট ব্যবসার আইডিয়া পেলে সেই আইডিয়াকে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সব আপনার। যেকোনো একটি আইডিয়া খুঁজে বের করুন। আমি জাস্ট একটি ধারণা দিলাম। আপনাকে এগুলোই করতে হবে। ব্যপারটা এমন নয়।
তবে, ছোট ব্যবসার আইডিয়া থেকে বড় ব্যবসা হয়। অ্যামাজন একদিনে এতোবড় প্রতিষ্ঠান হয় নি। দিনে দিনে গড়ে উঠেছে ব্যবসা।
যাইহোক, আপনার ব্যবসায়িক সফলতা কামনা করছি। আজকের পোস্টটি কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্যক ধন্যবাদ।