ফাইভার মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে চাচ্ছেন। কিন্তু জানেননা, ফাইভার একাউন্ট তৈরির উপায়? ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে ফাইভার সবচেয়ে জনপ্রিয়। ফাইভার সাইটটি এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন নতুন ফ্রিল্যান্সাররা এখানে একাউন্ট তৈরি করে সহজেই ইনকামে আসতে পারে। ফাইভারে শুরুতে মাত্র পাঁচ ডলারের গিগ দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করা যায়। ফাইভারে একাউন্ট তৈরী করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ। যেকেউ মাত্র কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে প্রফেশনাল মানের একটি ফাইভার একাউন্ট ক্রিয়েট করতে পারবেন। তাহলে আসুন কথা না বাড়িয়ে Fiverr Account তৈরির উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক। fiverr account create করার উপায় জেনে সহজেই একটি প্রফেশনালমানের ফাইভার একাউন্ট তৈরি খুবই করুন। কিভাবে ফাইভার একাউন্ট ভেরিফাই করবেন?
আসুন fiverr account create করার উপায় জেনে নেই:
শুরুতে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের যেকোনো একটি ব্রাউজারের সার্চ বারে গিয়ে Fiverr.com লিখে সার্চ করবেন। আর আপনি যদি স্মার্টফোন থেকে ফাইভার একাউন্ট ক্রিয়েট করতে চান। তাহলে স্মার্টফোনের ক্রম ব্রাউজারে ক্লিক করে মোবাইলের উপরের দিকে থ্রি ডট আইকনে ক্লিক করে ডেস্কটপ মুড অন করে নিবেন।এবার দেখুন আপনার মোবাইল থেকেই কম্পিউটারের মতো কাজ করতে পারবেন। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম জেনে কার্ড সংগ্রহ করুন:
এই ধাপে আপনার ই-মেইল দিয়ে সাইন আপ করতে হবে। সাইন আপ করার জন্য ” Enter Your Email Account” লিখা একটি বক্স দেখতে পাবেন। এই বক্সে আপনার ইমেইল একাউন্ট টি দিয়ে কনটিনিউ বাটন প্রেস করুন।
পরবর্তী ধাপে আপনার কাঙ্ক্ষিত fiverr account create এর জন্য একটি ইউনিক ইউআরএল সেট করতে বলবে। এবার আপনি এমন একটি ইউনিক ইউআরএল সেট করতে চেষ্টা করবেন যেটি আপনার একাউন্টের ক্যাটাগিরর সাথে মিল আছে। তাহলে আপনার একাউন্ট টি অপটিমাইজ হতে কিছুটা সুবিধা পাবে।
ইমেইল ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে ফাইভার একাউন্ট তৈরির আরেকটি ধাপ সম্পূর্ণ হবে:
এবার আপনার দেওয়া ইমেইল একটি লিংক দেওয়া হয়েছে। আপনার ইমেইল-গিয়ে এটি যে আপনারই ইমেইল সেটি ভেরিফাই করতে ফাইভার থেকে আসা Fiverr Activated your account লিংকে ক্লিক করে ইমেইল টি ভেরিফিকেশন করবেন। ব্যস আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন হয়ে যাবে।
তারপর Password সেট করতে হবে। অবশ্যই একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড দিতে চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার একাউন্টটির সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। পাসওয়ার্ড কমপক্ষে ৮ টি নাম্বার, লেটার, সিম্বল এবং আপার-কেস,লোয়ার-কেস এর সমন্বিতভাবে দিবেন।তাহলে আপনার একাউন্টটির পাসওয়ার্ড স্ট্রং হবে। উদাহরণস্বরূপ @$Bxcg23€₹ এটি একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড।
fiverr account create করে প্রফেশনালি সেটিং করতে হবে:
এই ধাপে আপনার কাজ হল আপনার ফাইভার একাউন্ট প্রফেশনালি সেটিং করে নেওয়া।
প্রথমে ফাইভার ড্যাশবোড যাবেন। এবার আপনার একাউন্টের সকল গুরুত্বপূর্ণ সেটিংগুলো করতে পারবেন। আপনার তৈরি করা নতুন ফাইভার একাউন্টের ড্যাশবোডের বামপাশে ক্যাটাগরি এবং সেলার দেখতে পাবেন। ক্যাটাগরি অপশন থেকে fiverr account create করার পরে সেটিং সম্পূর্ণ করুন।
আরোও পড়ুন: ফাইভার থেকে কাজ পাওয়ার উপায়
পিকচার আপলোড এর মাধ্যমে ফাইভার একাউন্ট তৈরির আরেকটি ধাপ সম্পূর্ণ হবে:
সুন্দর এবং প্রফেশনালমানের একটি প্রোফাইল পিকচার আপলোড করুন। প্রোফাইলে সব সময় আপনার নিজের ছবি দিতে চেষ্টা করবেন। এবং যে ছবিতে আপনাকে দেখতে অনেক কনফিডেন্ট লাগে অবশ্যই এমন ছবি প্রফাইলে ব্যবহার করুন। আর যে কাজটি করতে হবে তা হলো পিকচার আপলোড করার আগে সেটার এসইও করে নিবেন। তাহলে আপনার একাউন্ট এর গিগ গুলো র্যাংকে আসতে হেল্প করবে।
fiverr account create এর উপায় হিসেবে ট্র্যাগ লাইন এড করুন:
প্রোফাইল পিকচার এড করার পর আপনার কাজ হবে, আপনার একাউন্ট এর জন্য এক বাক্যে একটি ট্র্যাগ লাইন দেওয়া । ট্র্যাগ লাইন টা দেখেই যেন বুঝা যায় আপনি কি নিযে কাজ করেন। সঠিক ট্র্যাগ লাইন দিতে পারলে আপনার প্রোফাইল দেখে বায়ার বুঝবেন আপনি কি কাজ করেন। আর যখন গিগ পাবলিশ করবেন তখন ফাইভার রোবট্রিক্স সিসটেমে গিগ র্যাংকে নিয়ে আসতে যেসব উপাদান আছে তার মধ্যে ট্র্যাগ লাইন একটি গুরুত্বপূণ উপাদান। ২৪০ টাকা ফ্রি বিকাশ পেমেন্ট
fiverr account create এর উপায় হলো প্রফেশনাইল ডেসক্রিপশন লিখা:
ট্র্যাগ লাইনের পরে আপনার ক্রিয়েট করা ফাইভার একাউন্ট এর জন্য আরেকটি গুরুত্বপূণ অংশ হলো ডেসক্রিপশন লেখা। ১২০০ ক্যারেক্টার পাবেন ডেসক্রিপশন লেখার জন্য। ডেসক্রিপশনে আপনি কি কাজ পারেন. অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ইত্যাদি দিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন; এই ডেসক্রিপশন যেন অবশ্যই আপনার একাউন্ট এর মূল কি-ওয়াড এর উপর ভিত্তি করে লেখা হয়। এবং আপনি অন্য যেকাজগুলোর গিগ আপলোড করতে চান তার ইঙ্গিত আকারে দিতে পারেন।
ল্যাঙ্গুয়েজ এড করুন আপনার ফাইভার একাউন্ট এর সাথে:
এইধাপে আপনাকে আপনার একাউন্টের ভাষা সেটিং করুন। আপনার প্রফাইলে বাংলা ভাষা নেটিভ ভাষা রাখবেন। আর ইংরেজি অবশ্যই কনর্ভসেশন রাখবেন, এছাড়া আপনি যে ভাষায় কথা বলতে পারেন সেটা উল্লেখ করতে পারেন। যেমন- জার্মান, ফ্রেন্স, জাপানিস, চাইনিস ইত্যাদি ভাষা দিতে পারেন।
ফাইভার একাউন্ট এর সাথে সোশ্যাল মিডিয়া লিংনকড করুন:
এইধাপে আমরা আমাদের স্যোশাল মিডিয়ার লিংকগুলো এড করবো। আমাদের যেসব স্যোশাল মিডিয়া প্রোফাইল আছে সেসব মিডিয়ার লিংকগুলো আমরা ফাইভার একাউন্টে এড করে দিবো।
আরোও পড়ুন: অনলাইন থেকে টাকা ইনকামের সেরা উপায়
স্কিল এড করে ফাইভার একাউন্ট তৈরির উপায় সম্পন্ন হবে:
এবার আমাদের একাউন্ট এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হলো স্কিলস এড করা । আপনি যেসব ডিজিটাল স্কিল ডেভলাপ করেছেন তা আপনার প্রোফাইলে এড করুন। যেকাজ পারেন না এমন কাজ এড করতে যাবেন না। তাহলে হিতে-বিপরীত হবে। তাই আপনার যে স্কিল আছে সেটাই উল্লেখ করুন। Fiverr skill test সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে Fiverr help centre
fiverr account create প্রক্রিয়ায় কিছু স্কিলস:
- Digital Marketing
- Social Marketing
- E-mail Marketing
- Customer Service
- English Language
- Facebook marketing
- Virtual Assistant
- YouTube Marketing
- SEO (Search Engine Optimization)
- Ethical Hacking
- Cyber security
- Web Development
- Web Design
- Graphics Design
- Content Writing
- Guest Post Writer
- Social Bookmarking
Education এর যোগ্যতাও আপনার ফাইভার একাউন্ট উল্লেখ করুন:
এবার আপনার প্রোফাইলে আপনার যে শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে তা এড করতে পারেন। হতে পারে প্রাতিষ্ঠানিক বা কোনো ফ্রিল্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে কোন কোর্স করছেন তা এখানে উল্লেখ করতে পারেন।
fiverr account create এর পর সাটিফিকেট সংযুক্ত করুন:
প্রাতিষ্ঠানিক আ-অপ্রাতিষ্ঠানিক যেকোন সাটিফিকেট এড করতে পারেন। তবে যেটা আপনার প্রোফাইলের সাথে যায় অবশ্যই এমন সাটিফিকেট থাকলে দিবেন ।
প্রফেশনাল fiverr account create করতে হলে স্কিল টেস্ট দিতে হবে:
আপনি আপনার একাউন্টে যেসকল স্কিল এড করেছেন সেগুলোর টেস্ট দিতে পারবেন। যেসকল স্কিলের টেস্ট দিবেন সেসকল স্কিলের পাশে Blue ট্রিক পাবেন। ১০ পয়েন্ট এর মধ্যে কত পার্সেন্ট নাম্বার পেয়েছেন তা টেস্টে পাশ করা স্কিল গুলোর পাশে দেখাবে।
টেস্টে মোট ৪০ টি এমসিকিউ টাইপ প্রশ্ন থাকবে। প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিলে পরবর্তী প্রশ্নে যেতে পারবেন। মোট সময় পাবেন ৪০ মিনিট। পাশ মার্কের জন্য পেতে হবে ৬০% নাম্বার । অর্থাৎ ৪০ টি প্রশ্নের মধ্যে আপনাকে ২৪ টিতে কারেক্ট উত্তর দিতে হবে। তাহলে পাশ নাম্বার থাকবে। পাশ না করতে পারলে রিটেক দিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন কোন স্কিলের উপর দুই বার ফেল করলে বা ২৪ মার্ক পেতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী তিন মাস বা ৯০ দিনের মধ্যে আর সেই স্কিলে টেস্ট দিতে পারবেন না। তাই টেস্ট দেওয়ার আগে একটু ভালো করে প্রস্তুতি নিযে তারপর পরীক্ষা দিবেন।
আর ফাইভার স্কিল টেস্ট বা ইংলিশ টেস্ট পাশ করতে না পারলে গিগ পাবলিশ করতে পারবেন না।
আবার যদি এসইও এর কাজ করতে চান। তাহলে এসইও এর গিগ পাবলিশ করার জন্য আগে এসইও টেস্ট দিয়ে পাস করতে হবে।
New Gig on fiverr account
এবার আমরা গিগ তৈরি করার ধাপে আছি। ক্রিয়েট নিউ গিগে ক্লিক করে নতুন একটি গিগ ক্রিয়েট করতে পারবেন। তার জন্য নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে।
ফাইভার গিগের জন্য একটি উপযুক্ত টাইটেল বাছাই করুন:
প্রথম ধাপ হলো একটি টাইটেল দিতে হবে। টাইটেলে অবশ্যই মেইন কি ওর্য়াড থাকতে হবে। টাইটেল লিখার জন্য আপনি ৮০ ক্যারেক্টার পাবেন । এর মধ্য ৬০ ক্যারেক্টার দিয়ে টাইটেল দিয়ে টাইটেল দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। তাহলে গিগ র্যাঙ্ক করে দ্রুতই।
সঠিক ক্যাটাগরি সিলেক্ট করুন:
এই ধাপে আপনাকে আপনার গিগের জন্য একটি ক্যাটাগরি এবং সাব- ক্যাটাগরি দিতে হবে। এই ক্যাটাগরি এবং সাব-ক্যাটাগরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি গিগ র্যাংক করার জন্য।
ফাইভার গিগের সঠিক ট্র্যাগ সিলেক্ট করুন:
এই ট্র্যাগ হলো একটি গিগের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনার গিগ Rank করার জন্য ট্র্যাগই সবথেকে বেশি গুরু্ত্বপূণ ভূমিকা পালন করে। একটি গিগে আপনি পাচ টি ট্র্যাগ ব্যবহার করতে পারবেন। আর প্রতিটি ট্র্যাগে মোট ২০ ক্যারেক্টার ব্যবহার করতে পারবেন। আর একটি ট্র্যাগ লিখার পর অবশ্যই ইন্টার বাটন প্রেস করবেন। সব গুলো ট্র্যাগ এক সাথে লিখে ইন্টার করলে নিবে না।
Price:
এই ধাপে আপনাকে আপনার গিগের জন্য Scope and package করতে দেওয়া হবে।
- Basic
- Standard
- Premium
এই তিনটি প্যাকেজ এর মাধ্যমে বিস্তারিত লিখতে পারেন। তুলে ধরুন আপনার গিগ সম্পর্কে।
Description and FAQ:
এবার আমাদের ফাইভার গিগের জন্য একটি বর্ণনা লিখতে হবে। ফাইভার গিগের বর্ণনা লেখার জন্য মোট ১২০০ ক্যারেক্টার পাওয়া যাবে। এই ১২০০ ক্যারাক্টারের মধ্যেই একটি এসইও সমৃদ্ধ বর্ণনা লিখতে হবে।
Requirements:
বায়ার কাছ থেকে কাজ পাওয়ার পরে সেই কাজ করার জন্য কি কি রিক্যোয়ারমেন্ট প্রয়োজন তা এই ধাপে উল্লেখ করতে পারেন।
ফাইভার গিগের Gallery থেকে ইমেজ এড করুন:
এবার আপনার গিগের জন্য একটি সুন্দর থাম্বনেইল বা পিকচার সেট করুন। এটাকে বলা হয় ফাইভার গিগ ইমেজ। গিগ ইমেজ সেট করার আগে ইমেজটি এসইও করে নিবে। আর মোট তিনটি ইমেজ ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও একটি শর্টস ভিডিও আপলোড করতে পারবেন।
এবার ফাইভার গিগটি Publish করতে পারেন:
সব কাজ শেষ হলে আপানার গিগ পাবলিশ করতে পারবেন। একটি সুন্দর প্রফেশনাল গিগ আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার বদলে দিতে।গিগ পাবলিশ এবং ফাইভার স্কিল টেস্ট এর উপর বিস্তারিত আটিলেক আসবে যদি আপনারা চান। আর্টিকেল পড়ে ফাইভার একাউন্ট তৈরির উপায় জানতে সমস্যা হলে নিচের ভিডিও দেখতে পারেন।
উপরের আর্টিকেলটি যদি মনোয়োগ দিয়ে পড়েন তাহলে কিভাবে একটি fiverr account create করতে হয় তা বুঝে গেছেন। এবং কিভাবে টেস্ট দিবেন, গিগ পাবলিশ করবেন তার একটি ধারণা দিতে চেষ্টা করেছি মাত্র। জানি একটি পোস্টে সবগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা ঠিক হবে না। কারণ এতো গুলো পার্ট একসাথে আপনাদের জন্য একটু কঠিন হবে। তাই আপনার যদি চান তাহলে কিভাবে ফাইভার গিগ ক্রিয়েট করতে হয়, ফাইভার একাউন্ট এর স্কিল টেস্ট, ফাইভার একাউন্ট এর বিস্তারিত আরো কিছু পোস্ট নিয়ে আসবো আপনাদের জন্য। আমাদের shrabonbd.com ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
Pingback: ফাইভার গিগ মার্কেটিং/ ফাইভারে প্রথম অর্ডার পাওয়ার উপায় - shrabonbd.com