সূচনা:
বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে নেটওয়ার্ক এর প্রসারের প্রভাবে CPA Marketing খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমাদের দেশের যুবসমাজ এখন ফ্রিল্যান্সিং পেশার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস-এ যদি আপনি ভিজিট করেন, তাহলে দেখবেন মার্কেটপ্লেস এ সিপিএ মার্কেটিং এর হিউজ পরিমাণ কাজ রয়েছে। আর সিপিএ মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট।
সকল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এর বিজ্ঞাপনী মূল নীতি হলো প্রচারে অধিক অর্থ ব্যয় করা। প্রচারেই প্রসার। এই নীতির বাস্তবায়ন করা। বর্তমানে বেশির ভাগ কোম্পানি তাদের পণ্যের প্রচার করেন ডিজিটাল মাধ্যমে। আর এসব ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের প্রচার চালান। ব্যান্ড এবং পণ্যের প্রচারও করেন ডিজিটাল মাধ্যমে। কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের প্রচার করার জন্য বিভিন্ন সিপিএ মার্কেটিং এজেন্সি ব্যবহার করেন।
আর সিপিএ মার্কেটিং এর মাধ্যমে তাদের টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারেন। ২০২৩ সালে এসে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ সিপিএ মার্কেটিং করে ইনকাম করছে। আপনি যদি সিপিএ মার্কেটিং করে ইনকাম করতে চান। বা জানতে চান কিভাবে সিপিএ মার্কেটিং কাজ করে তাহলে আমাদের আজকের এই আর্র্টিকেলটি আপনার জন্য উপযুক্ত হবে। কারণ আমরা আজকের আর্টিকেলে সিপিএ মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি।
CPA marketing:
CPA Stands for Cost Per Action. সিপিএ মার্কেটিং হলো কস্ট পার এ্যকশন। বা প্রতিটি ক্লিকের জন্য টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি কাজের জন্য টাকা। সহজ করে যদি বলি তাহলে, এভাবে বলতে পারি যে, কোন প্রতিষ্ঠান তার পণ্যের প্রচারের জন্য বা তাদের টার্গেটেড কাস্টমারের জন্য কোন একজন ব্যক্তি বা বিজ্ঞাপনী এজেন্সি এর সাথে চুক্তি করলো তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন নির্দিষ্ট কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি বা এজেন্সি সিপিএ মার্কেটিং এর কাজ করছে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলোর কাস্টমার বা ট্রাফিক বাড়ানোই মূল কথা।
মনে করুন, আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে। অথবা একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে । আপনি এই ওয়েবসাইটে কোনো একটি পণ্যের বিজ্ঞাপনের লিংক দিয়ে দিলেন। এবং সেই পণ্য সম্পর্কে এক প্যারা লিখে দিলেন। তাহলে দেখা যাবে আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটরস সেই পণ্যের বিজ্ঞাপনের বর্ণনা দেখে লিংকে ক্লিক করবে। ক্লিক করে কোম্পানির ওয়েবসাইটে চলে গেল। ব্যস আপনার কাজ এতোটুকুই। যেহেতু আপনার ওয়েবসাইট থেকে মানুষ ক্লিক করে সেই ওয়েবসাইটে যাবে সেহেতু আপনি পেমেন্ট পাবেন। প্রতিটি ক্লিক থেকে পেমেন্ট দেওয়া হয় বলেই এটার নাম সিপিএ মার্কেটিং (cpa marketing)।
CPA marketing এর উদ্দশ্য:
সিপিএ মার্কেটিং এর উদ্দেশ্য হলো টার্গেটেড কাস্টমারে কাছে পণ্যের বৈশিষ্ঠ্য তুলে ধরা। শুধু সিপিএ মাকেটিং এর মাধ্যমেই আপনার প্রয়োজনীয় টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। অন্য কোন বিজ্ঞাপনী মাধ্যমে সেটা সম্ভব নয়। কারণ আপনি যখন টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিবেন তখন আপনার পণ্য যারা পছন্দ করে বা কিনতে পারে এমন কাস্টমারের কাছে পৌঁছাবে। আবার যারা আপনার পণ্য পছন্দ করে না বা কিনবে না তারাও দেখবে। তাতে আপনার খরচ বাড়বে কিন্তু কনভার্সন কম হবে। কিন্তু সিপিএ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে খরচ কম হবে আর কনভার্সন বেশি হবে।
account creation for CPA marketing:
প্রথমত, সিপিএ মার্কেটিং করার জন্য, CPA Network এ একটি Account Create করতে হবে। দ্বিতীয়ত, একাউন্ট করার জন্য অবশ্যই একটি ইমেইল থাকতে হবে। তৃতীয়ত, একটি মোবাইল বা ডেক্সটপ থাকলেই চলবে। আর ভালো নেটওয়ার্ক থাকতে হবে। এবার সিপিএ সাইটে গিয়ে সাইন আপ করুন। তারপর Affileate Programme এ জয়েন করুন।
অবশ্যই কোনো বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় সিপিএ মার্কেটিং সাইটে একাউন্ট ক্রিয়েট করবেন। নিজের সাইটের ধরণ অনুযায়ী বা আপনার ট্রাফিক অনুযায়ী ক্যাটাগরি সিলেক্ট করবেন। একাউন্ট ক্রিয়েট করার পর এডমিন আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করবে। ততোদিন পযর্ন্ত আপনার একাউন্টের আবেদন পেন্ডিং অবস্থায় থাকবে। আপনার একাউন্টের ইমেইল, মোবাইল নাম্বার, এড্রেস ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে একাউন্ট এক্টিভ করে দেওয়া হবে। তখন আপনার সিপিএ একাউন্ট থেকে কাজ করতে পারবেন।
best CPA network site in 2023:
আমরা শুধু সিপিএ নেটওয়ার্ক সাইটগুলোর নাম দিলাম। এতোগুলো সাইটের লিংক দেওয়া সম্ভবনা। তবে সাইটের নাম কপি করে গুগলে সার্চ করলে সাইটগুলো পাবেন। তারপর আপনি ভালোকরে যাচাই-বাছাই করে, একাউন্ট ক্রিয়েট করবেন। তারপর কাজ শুরু করবেন।
- Cpafull.com
- Alpha affiliates.com
- Royal partners
- MyLead
- AdsEmpire
- Trafee
- Fpm.Global
- ClickDealer
- Ausaffiliate
- Getprofit
- Algo Affiliates
- Aivix
- Biamopartners
- Cpacombo
- Axad LLC
- PayV
- ProfitPay
পজিটিভ সাইড অফ CPA Marketing:
সিপিএ মার্কেটিং করার কিছু ভালো দিক আছে। একটি প্রতিষ্ঠান যখন সিপিএ মার্কেটিং করে তখন তাদের অনেক গুলো সুবিধা পায়ে থাকেন। সিপিএ মার্কেটিং করার সুবিধাসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো।
টার্গেটেড কাস্টমার;
সিপিএ মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান সব থেকে বেশি যে সুবিধা পায় তা হলো, তাদের টার্গেটেড কাস্টমার পেয়ে থাকেন। সরাসরি তাদের কাঙ্খিত কাস্টামদেরকে তাদের পণ্য সম্পর্কে জানাতে পারেন।
খরচ কম;
সিপিএ মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আরো একটি সুবিধা হলো খরচ কম হয়। ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এর তুলনায় সিপিএ মার্কেটিং করলে কোম্পানির খরচ অনেক কম হয়। তাই কোম্পানিগুলো সিপিএ মার্কেটিং এর দিকে আগ্রহী হচ্ছে।
বেশি কনভার্সন হয় CPA Marketing করে:
সিপিএ মার্কেটিং করে কোম্পানিগুলো অনেক বেশি কনভার্সন করতে পারেন। তাই স্বভাবতই প্রতিষ্ঠানগুলো সিপিএ মার্কেটিং করে থাকে।
CPA marketing এ রিস্ক কম :
সিপিএ মার্কেটিং করলে কোম্পানিগুলোর ঝুঁকি অনেক কম থাকে । কারণ তাদের কনভার্সন অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাদের টার্গেটেডে কাস্টমার পেতে পারেন। তাই সিপিএ মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর ঝুকি কম থাকে।
Cpa marketing এর উদ্দেশ্য:
সিপিএ মার্কেটিং কেন করে প্রতিষ্ঠানগুলো নিশ্চয়ই তার কোন না কোন কারণ আছ? আপনি যদি সিপিএ মার্কেটিং করতে চান তাহলে এসব খুঁটিনাটি বিষয় আপনাকে জানতে হবে।
কোম্পনি তাদের পণ্য বিক্রয় করার জন্য:
কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য বিক্রয় করার জন্য বা পণ্য বিক্রয় বাড়ানোর জন্য সিপিএ মার্কেটিং করে থাকে। কোম্পানিগুলো তাদের ট্রাফিক কনভার্সন বাড়িয়ে তাদের পণ্য বিক্রয় বাড়াতে চায় তাই তারা সিপিএ মার্কেটিং করে থাকে।
ডিজিটাল সেবা বিক্রয় করতে সিপিএ মার্কেটিং:
কোম্পানিগুলো সিপিএ মার্কেটিং ব্যবহার করে তাদের ডিজিটাল পণ্য বা সেবা বিক্রয় বাড়াতে চায়। তাই তারা সিপিএ মার্কেটিং করে থাকে।
সিপিএ মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে কি কি পার্থক্য আছে:
সিপিএ মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে কিছু সূক্ষ্য পার্থক্য আছ তা অনেকেই জানেন না। যদিও সিপিএ মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং দুটিই ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরু্ত্বপূর্ণ অংশ। এই দুটি মার্কেটিং ব্যবস্থার মধ্যে যে কিছু পার্থক্য আছে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।
প্রথমে দেখবো CPA Marketing এর কিছু বৈশিষ্ঠ্য:
- সিপিএ মার্কেটিং এমন একটি মার্কেটিং সিস্টেম যেখানে কোম্পানির কোন পণ্য বা সেবার প্রচারের যেকোন একটি কাজ সম্পূর্ণ হলে তাকে টাকা প্রদান করা হয়।
- সিপিএ মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় সব সময় যে, পণ্য বিক্রয় হতেই হবে ব্যপার টা এমন নয়।
- সিপিএ মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় ফ্রিল্যান্সার বা মার্কেটিং এজেন্সি যতটুকু কাজ করবেন ততোটুকুর জন্য পেমেন্ট পাবেন।
- কোন একটি কনভার্সন করাতে পারলেই পেমেন্ট পাবেন।
- সিপিএ মার্কেটিং-থেকে ইনকাম কম।
- প্রতিষ্ঠানের খরচ কম হয়।
- সিপিএ মার্কেটিং করে দ্রুত ইনকাম করা যায়।
- সিপিএ মার্কেটিং করতে সময় কম লাগে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং :
- শুধু পণ্য বিক্রয় হলেই টাকা প্রদান করা হয়।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ পণ্য বিক্রয়ের উপর নির্ভরশীল।
- বিক্রয় করতে পারবেন না টাকা পাবেন না ।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় পণ্য বিক্রয় হলে তার ৫% থেকে ২০% পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় লাভ বা ইনকাম বেশি হয়ে থাকে।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রক্রিয়া একটু বেশি সময় সাপেক্ষ।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় কাজ করতে হলে আপনার অনেক বেশি ট্রাফিক থাকতে হবে।
সিপিএ মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পার্থক্য মূলত পণ্য বিক্রয় করার ক্ষেত্রে। সিপিএ মার্কেটিং- এ কনভার্সন করতে পারলেই ইনকাম আর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ পণ্য বিক্রয় হলে টাকা ইনকাম। সিপিএ মার্কেটিং-এ যতটুকু কাজ ততটুকু টাকা । অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ পণ্য বিক্রয় হলে কমিশন পাবেন।
পণ্য বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে ছোট-ছোট কাজ করতে দেওয়া হয় সিপিএ মার্কেটিং আর পণ্য বিক্রয় করা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে।
CPA marketing কাজের কিছু নমুনা উল্লেখ করা হলো:
যারা দ্রুত টাকা ইনকাম করতে চান, তাদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং না। তাদের সিপিএ মার্কেটিং করা অনেক ভালো। কারণ সিপিএ মার্কেটিং করে সহজে এবং দ্রুত ইনকামে যাওয়া যায়। তাছাড়া একটি প্রোজেক্টের যতটুকু কাজ করবেন ঠিক ততোটুকুর জন্যই পেমেন্ট পাবেন। সিপিএ মার্কেটিংয়ে আপনাকে একটি অফার নিয়ে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ এই অফার থেকে আপনাকে লিড কনভার্সন করতে হবে। তাহলেই আপনি পেমেন্ট পাবেন।
- সিপিএ মার্কেটিং কাজের কিছু উদাহরণ হলো:
- ইমেইল সাবমিশন করানো।
- কোম্পানির কাস্টমার’স ফরম পূরণ করাতে হবে।
- ফরম সাইন আপ করাতে হবে।
- ডাউনলোড অফার থাকলে ডাউনলোড করাতে হবে।
- কাস্টমার ফিডব্যাক দেওয়া।
এসব অফারগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন। অফারগুলোর একটি এ্যাকশন সম্পূর্ণ হলেই আপনি পেমেন্ট পেয়ে যাবেন। এটাই হলো সিপিএ মার্কেটিং। আপনি যদি মনে করেন আপনি দীর্ঘ সময়ের জন্য কাজ করবেন। CPA Marketing পেশা হিসেবে নিবেন। তাহলে ভুল ভাবছেন। কারণ সিপিএ মার্কেটিং এর অফারগুলো বেশিদিন থাকে না। তাই আপনি যদি অনেকদিন ধরে কাজ করতে চান। আপনি যদি ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হবে। আপনি অনেকদিন ধরে কাজ করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকে পেশা হিসেবে নিতে পারবেন।
CPA marketing সিপিএ মার্কেটিংয়ে ভালো করার উপায়:
ইতোমধ্যে আপনারা জেনে গেছেন যে, সিপিএ মার্কেটিং কি, কিভাবে ইনকাম করতে হয় সিপিএ মার্কেটিং করে, সিপিএ মার্কেটিং এর উৎস গুলো কি কি? এবার আসুন দেখে নেয়া যাক, কি কি থাকলে আপনি সিপিএ মার্কেটিংয়ে ভালো করতে পারবেন। এসব কিছু দেখবো এই ধাপে।
ওয়েবসাইট:
আপনি যদি সিপিএ মার্কেটিং করতে চান। এবং সিপিএ মার্কেটিং করে অনেক বেশি কনভার্সন করতে চান। আর বেশি কনভার্সন করে বেশি টাকা ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকা বাধ্যতামূলক। কারন যদি আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকে, তাহলে আপনার অনেক ট্রাফিক সোর্স আছে অলেরডি । আর এই ট্রাফিক ব্যবহার করে আপনি সিপিএ মার্কেটিং করে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। হোক ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বা ফ্রি ব্লগার সাইট যাই থাকুক।মর্দ্দা কথা হলো আপনার একটি ট্রাফিক ফ্লো থাকতেই হবে।
যদি আপনার কোন ওয়েবসাইট না থাকে তাহলে অবশ্যই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন। আর তাতে কিছু পোস্ট করুন। দেখবেন অল্প সময়ে বেশ ট্রাফিক বা ভিজিটরস পেয়ে যাবেন। তখন ওয়েবসাইট থেকেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আবার সিপিএ মার্কেটিং করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
স্যোশাল মিডিয়া:
ওয়েবসাইট যদি আপনার না থাকে তাহলেও টেনশন নেওয়ার কিছু নেই। কারণ সবারই আছে স্যোশাল মিডিয়া একাউন্ট । সকাল থেকে রাত অব্দি মানুষ ফেসবুক ,ইনসটাগ্রাম, লিংকডইন, টুইটার ইত্যাদিতে মগ্ন থাকেন। চাইলে এসব স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে সিপিএ মার্কেটিং করে অনেক টাকা ইনকাম কর সম্ভব। আপনার যদি একটি ফেসবুক পেজ থাকে। আর ফেসবুক পেজে ১ লক্ষ ফলোয়ার থাকে। তাহলে ফেসবুক পেজের এই বিশাল ফ্যানবেইস ব্যবহার করতে পারেন। এই ফ্যানবেইস ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই সিপিএ মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। তাছাড়া লিংকডইন হলো প্রফেশনাল সাইট। এখানে প্রচুর বায়ার পাবেন। আর সেই সাথে প্রচুর কাজ বা অফারও পাবেন। এসব সিপিএ মার্কেটিংয়ের কাজ করে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
ইউটিউব চ্যানেল:
আপনার যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকে। আর সেই ইউটিউব চ্যানেলে ১ লক্ষ বা ১০০k সাবসক্রাইবারস থাকে। তাহলে এই ১০০k সাবসক্রাইবারস দিয়ে খুব সহজেই সিপিএ মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই হিউজ পরিমাণ ট্রাফিক ব্যবহার করতে পারবেন। দেখা যাবে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ইনকামের সাথে সাথে সিপিএ মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন।
income by CPA marketing:
সিপিএ মার্কেটিং করে কতো টাকা আয় করা সম্ভব। এটা নির্ভর করছে আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, শ্রম, মেধা, ধর্য্য ইত্যাদির উপর। Digital marketing specialists এর মতে, সিপিএ মার্কেটিং এর শুরুতে $1000 ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে। তারপর অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকলে আপনার আয়ও বাড়তে থাকবে। তথ্য বলছে একজন প্রফেশনাল সিপিএ মার্কেটিং এক্সপার্ট মাসে-$10,000/ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।
অনলাইন থেকে টাকা ইনকামের অন্যান্য উপায় থেকে সিপিএ মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করা কিছুটা সহজ। তাই মানুষ ধীরে ধীরে সিপিএ মার্কেটিং এর দিকে আগ্রহী হচ্ছে। আর আপনি যখন চেষ্টা করবেন আপনার সেরাটা দেওয়ার জন্য তখন আস্তে-আস্তে কর্ম দক্ষতা বাড়বে, অভিজ্ঞতা বাড়বে তখন ইনকামও বাড়তে থাকবে। তবে সবাই যে সিপিএ মার্কেটিং-এ এসে সাথে সাথে সফল হবেন ব্যপারটা এমনও নয়।
কখন কখন আপনি ব্যর্থ হবেন। তবে মনে রাখবেন Failure is the pillar of success. অর্থাৎ ব্যর্থতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। লেগে থাকুন সফলতাই আসবেই। সফলতা একদিনে আসেনা। Rome was not built in a day। কোনো ভালো কাজ রাতারাতি সম্পূর্ণ হয়না। যেকাজই করেন শুরুতে পরিশ্রম করতেই হবে। আস্তে আস্তে সফলতা আসবে।
সিপিএ মার্কেটিং করতে যেসব অফার পাবেন:
সিপিএ মার্কেটিংয়ে আপনাকে বিভিন্ন অফার নিয়ে কাজ করতে হবে। এসব অফার থেকে আপনাকে কনভার্সন করাতে হবে। কনভার্সন করাতে পারলেই আপনি পেমেন্ট পাবেন। সিপিএ মার্কেটিং-এ যেসব অফার নিযে কাজ করতে পারবেন নিম্নে আলোচনা করা হলো:
সাইন আপ অফার:
সিপিএ মার্কেটিং করার জন্য সাইন আপ অফার একটি সহজ এবং জনপ্রিয় অফার। আপনি চাইলে এই সাইন আপ অফার নিযে কাজ করতে পারেন। এই সাইন আপ অফারে কোম্পানির কোন একটি ফরম কাস্টমারদের দিয়ে সাইন আপ করাতে হবে। আপনার লিংকে ক্লিক করে যদি কোন কাস্টমার ফরম সাইন আপ করে। তাহলে আপনার একটি কনভার্সন হবে। আর এই কনভার্সনের জন্য আপনি পেমেন্ট ।
ইমেইল সাবমিশন;
সিপিএ মার্কেটিং-এর অফার গুলোর মধ্যে ইমেইল সাবমিশন করার কাজও একটি কমন কাজ। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান তাদের কাস্টমারদের ইমেইল সংগ্রহ করে । কাস্টমারদের ইমেইল ফরম পূরণ করানো লাগবে। কারণ কোম্পানিগুলো চায় তাদের কাস্টমারদের চাহিদা, শখ, অভ্যাস, পেশা ইত্যাদি ব্যক্তিগত তথ্যা। আর এর মাধ্যমে তারা কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের প্রচার চালাতে পারেন। তাই যত বেশি ইমেইল সাবমিশন এর কনভার্সন ততো বেশি ইনকাম।
কল অফার:
সিপিএ মার্কেটিং এর অফার গুলোর মধ্যে কল অফার নিযে কাজ করতে পারেন। কল অফার খুব সহজ এবং জনপ্রিয় একটি অফার ।কাজ করলে সহজেই কনভার্সন করতে পারবেন। এবং ইনকাম হবে অনেক বেশি।
বিক্রয় অফার :
সিপিএ মার্কেটিং করতে চাইলে বিক্রয় অফার নিয়েও কাজ করতে পারেন। কারণ বিক্রয় অফার নিয়ে কাজ করতে পারলে কনভার্সন অনেক বেশি পাবেন। কনভার্সন বেশি হবে ইনকাম বেশি হবে।
সার্ভে অফার:
সার্ভে অফার নিযে কাজ করতে পারেন। সার্ভে অফার নিয়ে কাজ করলে কনভার্সন সহজ হবে। তাই সার্ভে অফার নিয়েও কাজ করতে পারেন। সার্ভে অফারে আপনার দেওয়া লিংকে ক্লিক করে সার্ভে অংশগ্রহণ করলে আপনার কনভার্সন হবে। আর আপনার ইনকাম বাড়বে।
কাদের জন্য সিপিএ মার্কেটিং এর কাজ উপযুক্ত হবে?
যারা যারা সিপিএ মার্কেটিং এর কাজ করতে চান তারা সবাই করতে পারবেন। তবে কিছু মানুষ আছে যাদের জন্য সিপিএ মার্কেটিংয়ের কাজ খুব ইনকামের উৎস হতে পারে।
- যাদের অনেকটা অবসর সময় আছে যেমন, ছাত্র-ছাত্রী।
- যাদের অনলাইন থেকে ইনকাম করার আকাঙ্খা আছ।
- যারা আগামী এক থেকে দেড় বছর ৩-৪ ঘন্টা সময় দিতে পারবেন।
- যাদের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে বা নেটওয়ার্ক সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা আছে।
সিপিএ মার্কেটিং কি পেশা হিসেবে নেওয়া যায়:
সিপিএ মার্কেটিং করে যদি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারেনে তাহলে পেশা হিসেবে নিতে তো কোন সমস্যা নেই। তবে শুরুতে অবশ্যই কিছু দিন কাজ করুন দেখুন কতো টাকা ইনকাম করতে পারেন। কাজের অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকলে ইনকাম বাড়তে থাকবে তখন। তখন আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। সিপিএ মার্কেটিং পেশা হিসেবে নেওয়া যাবে কিনা ।
আপনি যদি এক বছর রেগুলার ইনকাম জেনারেট করতে পারেন, তাহলে আপনি পেশা হিসেবে নেওয়া ভাবনায় আনতে পারেন।
নতুনদের জন্য পরামর্শ :
যারা নতুন আছেন, বা সিপিএ মার্কেটিংয়ে আসার কথা ভাবছেন তাদের কথা বলবো। আগে সিপিএ মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো করে জানুন। দেখুন এবং নেটওয়ার্ক সর্ম্পকে যথেষ্ঠ জ্ঞান অর্জন করুন। বিভিন্ন যে টুলস আছে সেগুলোর সাহায্যে সিপিএ মার্কেটিং কাজ সহজেই করতে পারবেন। সেগুলোর ব্যবহার শিখুন।
আর শুরুতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু টাকা খরচ হতে পারে। তার প্রস্তুতি নিয়ে সিপিএ মার্কেটিয়ে আসবেন। সব বিষয়ে ভালো জ্ঞান অর্জন করতে পারলে আপনি যেকোন পেশাতে সফল হবেন। আপনার একটি ইমেইল দিয়ে বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় একিট সিপিএ মার্কেটিং সাইটে একাউন্ট ক্রিয়েট করা। নিজের সাইটের ধরন অনুযায় বা আপনার ট্রাফিক অনুযায়ী ক্যাটাগরি সিলেক্ট করা তারপর লিংক আপনার ওয়েবসাইট বা নিজের সাইটের ট্রাফিকের সাথে যুক্ত করে দেওয়া।
উপসংহার:
পরিশেষে নতুনদের উদ্দেশ্যে বলছি মনে রাখবেন, সব কাজের সফলতার জন্য চাই ধর্য্য, পরিশ্রম। কাজ করে যান। একদিন সফলতা আসবেই। কারণ মানুষ বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে কিন্তু পরিশ্রম কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করেনা। আপনি যদি কাজে ফাঁকিদেন। তাহলে সফলতা আপনাকে ফাঁকি দিবে। আপনি কখোনই সফল হতে পারবেননা। আর নিয়মিত কাজ করেন। আপনার সফলতা কেউ আটাকতে পারেবনা। আপনাদের সফলতা কামনা করছি। যদি আমাদের আর্টিকেল পড়তে ভালো লাগে তাহলে, আমাদের shrabonbd.com সাইটটি ভিজিট করতে পারেন। অন্য আর্টিকেল পড়তে পারেন। এমন সব গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আছে আমাদের সাইটে। ধন্যবাদ।
বি:দ্র গুগলের ট্রার্মস এন্ড কন্ডিশনের জন্য কিছু শব্দ, নাম, সাইট ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হয়েছ।
Pingback: অনলাইন ইনকাম বিডি পেমেন্ট বিকাশ - shrabonbd.com