কপিরাইট ফ্রি ভিডিও কি? কপিরাইট ফ্রি ভিডিও হলো কোনো ইমেজ, অডিও, ভিডিও, সাউন্ড, মিউজিক, থাম্বনেইল, আর্টিকেল, অনলাইন কনটেন্ট ইত্যাদি এর স্বত্বাধিকার দাবি না করা। অর্থাৎ ভিডিও বা কনটেন্ট এর মালিকের পূর্বানুমতিছাড়া তার কনটেন্ট এর অংশবিশেষ বা সম্পূর্ণ অংশ যদি কপি করা হয় তাহলে, ভিডিও বা কনটেন্ট এর মালিক কপিরাইট ক্লেইম করবেন ন।। এটাই হলো মূলত কপিরাইট ফ্রি ভিডিও। আর কপিরাইট ফ্রি ভিডিও না হলে কনটন্টেের মালিকের কপিরাইট ক্লেইম করার প্রেক্ষিতে সেই ভিডিতে কপিরাইট স্ট্রাইক দেয় ইউটিউব। ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন কিভাবে? জানতে পড়ুন।
‘কপিরাইট ক্লেইম’ কথাটি পড়েই বুঝতে পারছেন যে, কপিরাইট এবং ক্লেইম এই দুটি আলাদা আলাদা শব্দ আছে। এখন কপিরাইট ক্লেইম বুঝতে হলে আমাদের বুঝতে হবে কপিরাইট কি? এবং ক্লেইম কি?
কপিরাইট ফ্রি ভিডিও উৎস:
কপিরাইট ফ্রি ভিডিও ব্যবহার করতে হলে জানতে হবে এর উৎস। কোথায় পাবেন কপিরাইট ফ্রি ভিডিও? আপনাদের জানানোর জন্য আমাদের ক্ষুদ্র আয়োজন। কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা তাদের ভিডিও ব্যবহার করতে দেয়। শুধু ভিডিও ড্রেসক্রিপশনে তাদের ক্রেডিট দিতে হয়। তাহলে আর কোনো সমস্যা হয় না। আর কপিরাইট ফ্রি অডিও ব্যবহার করতে চাইলে, ইউটিউবের অডিও লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারেন। কপিরাইট ফ্রি ভিডিও এর একটি আপনাদের দিচ্ছি। নিম্নে দেয়া হলো।
MixKit
Mazwai
Vista Create.com
Videvo.com
Videezy
Coverr
Vidsplay
Darefal
Pik Wizard
কপিরাইট স্ট্রাইক এবং কপিরাইট ফ্রি ভিডিও
মানুষ যখন তাঁর মেধা, মনন, সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করেন তাকেই মেধাসম্পদ বলে। মানুষের সৃজনশীলতার দ্বারা সৃষ্ট নতুন মেধাসম্পদের মালিকানা স্বত্ব নিবন্ধনের জন্য বাংলাদেশে কপিরাইট অফিস প্রতিষ্ঠা করা হয়। কপিরাইট অফিস প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৭ সালে। বাংলাদেশের কপিরাইট অফিসটি আধা-বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়। কপিরাইট অফিস, ‘কপিরাইট আইন-২০০০’ দ্বারা পরিচালিত হয়।
কপিরাইট আইনটি পরবর্তীতে ২০০৫ সালে সংশোধিত হয়। সংশোধিত হওয়ার পর থেকে কপিরাইট আইন ২০০৫ দ্বারাই কপিরাইট অফিস পরিচালিত হচ্ছে। আরো পরে ২০০৬ সালে কপিরাইট বিধিমালা ২০০৬ পাশ হয়। কপিরাইট বিধিমালা ২০০৬ পাশ হওয়ার পর থেকে কপিরাইট আইন ২০০৫। কপিরাইট বিধিমালা ২০০৬ দ্বারা কপিরাইট অফিস পরিচালিত হচ্ছে।
কপিরাইট অফিস কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ মানুষের মননশীলতার ও সৃজনশীলতার দ্বারা সৃষ্ট কাজের স্বত্ব রক্ষা করেন। একটি কপিরাইট অফিস প্রধানত চারটি কাজ করে:
আরো পড়ুন: ইউটিউব চ্যানেল থেকে ইনকাম করুন।
- কপিরাইট অফিস সৃজশীল মেধাস্বত্বের কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন প্রদান করে।
- কপিরাইট অফিস আপিল মামলা নিষ্পত্তিতে কপিরাইট বোর্ডকে সাহায্য করে থাকে।
একটি কপিরাইট অফিস কিছু কাজ করে থাকে। যেমন,
- নাট্যকর্ম,
- সংগীতকর্ম,
- রেকর্ডকর্ম,
- শিল্পকর্ম,
- চলচ্চিত্র বিষয়ককর্ম,
- বেতার সম্প্রচার,
- টেলিভিশন সম্প্রচার,
- কম্পিউটার-সফটওয়্যারকর্ম ইত্যাদি নিবন্ধন করে থাকে
- সাহিত্যকর্ম।
মেধাসম্পদের আর্থিক অধিকার হস্তান্তরযোগ্য। কপিরাইট নিবন্ধন করা হলে সৃজন কর্মের নৈতিক ও আর্থিক অধিকার অর্থাৎ মালিকানা সংরক্ষণ সহজ হয়। কপিরাইট নিবন্ধন আইনানুযায়ী বাধ্যতামূলক না হলেও, সৃজনশীল কর্মের মালিকানা নিয়ে আইনগত জটিলতা দেখা দিলে ‘কপিরাইট নিবন্ধন সনদ’ প্রমাণপত্র হিসেবে বিজ্ঞ আদালতে ব্যবহৃত হতে পারে। কপিরাইট অফিস বাংলাদেশ সর্বদা আন্তরিক সেবা প্রদান করে থাকে।
কপিরাইট অফিসটি জাতীয় গ্রন্থাগার ভবন আগারগাঁও, ঢাকা এ অবস্থিত। কপিরাইট অফিসের সাথে ই-মেইল: info@copyrightoffice.gov.bd, ওয়েবসাইট: www.copyrightoffice.gov.bd; Facebook ID: copyrightoffice; যোগাযোগ করা যায়। হেল্পডেস্ক ও হেল্পলাইনটি অফিস চলাকালে সর্বক্ষণ উন্মুক্ত থাকে।
ক্লেইম:
ক্লেইম হলো মানুষ যখন তাঁর মেধা, মনন, সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করেন যেমন,
- ভিডিও,
- ইউটিউব ভিডিও,
- অডিও,
- ইমেজ,
- ভিডিও থাম্বনেইল,
- সাহিত্যকর্ম,
- নাট্যকর্ম,
- সংগীতকর্ম,
- রেকর্ডকর্ম,
- শিল্পকর্ম,
- চলচ্চিত্র বিষয়ককর্ম,
- বেতার সম্প্রচার,
- টেলিভিশন সম্প্রচার,
- কম্পিউটার-সফটওয়্যারকর্ম।
এসব কনটেন্ট এর মালিকের পূর্বানুমতিছাড়া তাঁর কনটেন্ট এর অংশবিশেষ বা সম্পূর্ণ অংশ যদি কপি করা হয়। তাহলে কনটেন্ট এর মালিক তাঁর কনটেন্ট এর জন্য ক্লেইম করতে পারেন। এটাই হলো মূলত ক্লেইম। এক কথায় বলা যায় যে, ক্লেইম হলো ক্ষতিপূরণ দাবি করা ।
আর কপিরাইট ক্লেইম হলো, কোনো মানুষ যখন তাঁর মেধা, মনন, সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করেন। মানুষের সৃজনশীলতার দ্বারা সৃষ্ট মেধাসম্পদের মালিকানা স্বত্ব যখন তার পূর্বানুমতি ব্যতিরীকে ব্যবহার করা হয়। তখন তিনি আর্থিক এবং মননশীলতার দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকেন। আর তাঁর ক্ষতির জন্য তিনি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। এটাই হলো কপিরাইট ক্লেইম।
ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক রুলস কি:
আপনি যদি প্রফেশনালি ইউটিউবিং করতে চান। ইউটিউবিং করে আপনার ক্যারিয়ার গঠন করতে চান? তাহলে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করার জন্য কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে। ইউটিউবিং করার জন্য আপনাকে ইউটিউবর এর কিছু রুলস মেনে ভিডিও আপলোড করতে হবে। তাহলেই আপনি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য কপিরাইট ফ্রি ভিডিও ব্যবহার করতে পারেন।
যদি ইউটউব এর রুলস বা পলিসি না মেনে ভিডিও আপলোড করেন, যদি অন্যের ভিডিও এর অংশবিশেষ বা সম্পূর্ণ অংশ কপি করেন। তবে ইউটিউব এর পক্ষ থেকে আপনার ভিডিওতে একটি কপিরাইট স্ট্রাইক দেওয়া হবে। আর আপনার ইউটিউবের সেই ভিডিওটি আর মনিটাইজেশন করতে পারবেননা। ইউটিউব রুলস বা পলিসি অনুযায়ী আপনি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে অন্যের ভিডিও থেকে;
- ভিডিও,
- ভিডিও এর অংশ
- অডিও,
- ইমেজ,
- ভিডিও থাম্বনেইল ইত্যাদি কপি করতে পারবেন না। যদি কপি করেন তাহলে প্রকৃত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তাইতো ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে তাদের কনটেন্টর এর সম্পূর্ণ অংশ বা অংশবিশেষ কপি করলে কপিরাইট স্ট্রাইক দেয়। আর সেই সাথে একটি ইউটিউব চ্যানেলে যদি পর পর তিনটি স্ট্রাইক চলে আসে। তাহলে সেই চ্যানেলটি টার্মিনেট করে দেওয়া হয়।
কপিরাইট স্ট্রাইক রিমুভ করার উপায়: কপিরাইট ফ্রি ভিডিও
কপিরাইট স্ট্রাইক রিমুভ করার কয়েকটি উপায় আছে। প্রথমত, ইউটিউব যদি ভুলবসত আপনার ভিডিওতে স্ট্রাইক দেয়। তাহলে আপিল করতে পারবেন। তাছাড়া আপনার ভিডিওর কোনো একটি অংশ অন্যকেউ নিজের বলে দাবি করে। আর ভিডিওটি যদি সম্পূর্ণ আপনার হয়। তাহলে এই কপিরাইট স্ট্রাইকের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। আর যদি সত্যই অন্যের ভিডিও বা কনটেন্ট কপি করে থাকেন তাহলে তার সাথে যোগাযোগ করে কপিরাইট স্ট্রাইক তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে পারেন। অথবা আর একটি কাজ করতে পারেন। কপিরাইট ফ্রি ভিডিও ব্যবহার করতে পারেন।
কপিরাইট স্ট্রাইকের মেয়াদ:
তিন মাস বা ৯০দিন অপেক্ষা করতে পারেন। কারণ একটি স্ট্রাইকের কার্যকর থাকে তিন মাস পর্যন্ত। তিন মাস পরে স্ট্রাইক রিমুভ করে দেওয়া হয়। মনে রাখবেন, আপনার ইউটিউব চ্যানেলে প্রথম কপিরাইট স্ট্রাইক আসা মানে আপনাকে সর্তক করা। তাই কপিরাইট স্ট্রাইক আসলে পরবর্তী সাতদিন কিছু লিমিটেশন থাকবে চ্যানেলে। যেমন লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারবেননা।
যদি আপনার চ্যানেল মনিটাইজ করা থাকে। তবে পরবর্তী সাতদিন মনিটাইজেশন অফ থাকবে। প্রথম স্ট্রাইকের ৯০দিনের মধ্যে দ্বিতীয় স্ট্রাইক আসলে ১৫ দিনের জন্য চ্যানেলে কিছু লিমিটেশন থাকবে। আর মনিটাইজেশন বন্ধ থাকবে। ফাইনালি ৯০দিনের মধ্যে ৩য় স্ট্রাইক আসলে আপনার চ্যানেল এর ১২টা বেজে যাবে। মানে আপনার চ্যানেল মায়ের ভোগে। এই চ্যানেলের চিন্তা বাদ দিয়ে নতুন চ্যানেল খুলতে হবে। মানে টার্মিনেট করে দেওয়া হবে।
কপিরাইট কেইম কে করে:
আপনি কপিরাইট করে যার ভিডিও কপি করেছেন সে। আর কপিরাইট স্ট্রাইক দেয় ইউটিউব চ্যানেল অথোরিটি।
কপিরাইট কমিউনিটি গাইডলাইনস স্ট্রাইক:
কপিরাইট কমিউনিটি গাইডলাইনস স্ট্রাইক হলো আপনি যেদেশ থেকে ভিডিও আপলোড করছেন, সেই দেশের কমিউনিটিতে যেটা গ্রহণযোগ্য নয় সেটা ভিডিওতে উপস্থান করা। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের কমিউনিটিতে যেটা গ্রহণযোগ্য বাংলাদেশে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আবার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থতির অবনতি হতে এবং ভিডিওতে কমিউনিটি গাইডলাইনস স্ট্রাইক দিবে। শুধু শুধু অন্যের ভিডিও ব্যবহার করার প্রয়োজন কি? কপিরাইট ফ্রি ভিডিও ব্যবহার করুন।
মনে রাখবেন, কোনো প্রকার স্ট্রাইক আসলে তা ডিলিট করার দরকার নেই। কারণ স্ট্রাইক ডিলিট করলেও তা চ্যানেলে থেকে যাবে।
তাই ডিলিট করার কোনো দরকার নেই। আর ভিডিওতে যদি কপিরাইট ক্লেইম আসে তা হলে চ্যানেলে কোনো ক্ষতি হবেনা। তাই ক্লেইম আসলে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। যার ভিডিও কপি করেছেন সেই ভিডিওর রেভিনিউ পাবে। চাইলে আপনার সাথে শেয়ার করবে। জাস্ট এটাই।
- অনলাইনে ইনকাম করার উপায়! মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকামের সহজ উপায়
- মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায়;কম্পিলিট গাইডলাইন!
- ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং কি! ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেস্ট কোর্স কোনটি!
- ছোট ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে বের করার গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক
- ১০টি নতুন ব্যবসার আইডিয়া যা এখন শুরু করা উচিৎ!
উপসংহার:
উপরের আলোচনা থেকে আমি এটাই বলবো যে, আপনি যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেন। আর নিয়মিত ভিডিও আপলোড করেন। তাহলে কোনো প্রকার কপিরাইট মেটারিয়াল কনটেন্ট ব্যবহার করবেননা। কাজের ক্ষেত্রে সব সময় প্রফেশনাল থাকার চেষ্ঠা করবেন। আর সব উপরওয়ালার হাতে। নিয়মিত কাজ করুন। পরিশ্রম করুন। সফলতা আসবেই। নিজের ভিডিও নিজেই তৈরি করুন। প্রযোজন হলে কপিরাইট ফ্রি ভিডিও ব্যবহার করুন।